ঢাকা , শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ , ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৫ চেয়ারম্যানের ছেলেসহ হ্যাকার চক্রের তিন সদস্য গ্রেফতার সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ভবদহে খনন শুরু রাতে বাসরঘরে, সকালে আখক্ষেতে মিলল বরের লাশ ভবন মালিককে বিদ্যুৎ বিভাগের নোটিশ গাড়িচালকরা দেশের অন্যতম দক্ষ জনশক্তি-শ্রম সংস্কার কমিশন প্রধান আমি পক্ষপাতদুষ্ট চিন্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে অভ্যস্ত নই-জ্বালানি উপদেষ্টা ফ্লাইট ওড়ার আগেই স্থগিত হলো কক্সবাজার ‘আন্তর্জাতিক’ বিমানবন্দর বড় পরিবর্তনের আভাস অন্তর্বর্তী সরকারে যাত্রাবাড়ীতে সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় লন্ড্রি দোকান কর্মচারী নিহত মনোরেল চালু হলে চট্টগ্রামবাসী আরামদায়ক যাতায়াতের সুযোগ পাবে- চসিক মেয়র ৯ কোটি টাকা জালিয়াতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন চলবে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত রেকর্ড ছাড়িয়েছে খেলাপি ঋণ লিবিয়া থেকে ফিরলেন ৩০৯ বাংলাদেশি অসংক্রামক ব্যাধিতে নিঃস্ব মানুষ পাঁচ দফা দাবিতে ফার্মগেটে সড়ক অবরোধ শিক্ষার্থীদের যুবলীগ নেতা সম্রাটকে রোববারের মধ্যে আদালতে হাজিরের নির্দেশ ৮ দফা দাবিতে আজ ‘ঢাকা সমাবেশ’ সাগর-রুনির তদন্ত নিয়ে চরম অসন্তোষ সর্বশেষ ৬ মাস সময় দিলেন হাইকোর্ট

পদ-পদায়নে জনপ্রশাসনে বিরাজ করছে বিশৃঙ্খলা

  • আপলোড সময় : ২৪-১০-২০২৫ ০১:০৯:২০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৪-১০-২০২৫ ০১:০৯:২০ অপরাহ্ন
পদ-পদায়নে জনপ্রশাসনে বিরাজ করছে বিশৃঙ্খলা
পদ-পদায়নে জনপ্রশাসনে চলছে চরম বিশৃঙ্খলা। প্রশাসন নিয়ন্ত্রণকারী কর্তাব্যক্তিদের অদক্ষতা ও দলবাজিতেই জনপ্রশাসনে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে একাধিক মন্ত্রণালয় মাসের পর মাস সচিব ছাড়াই চলছে। আবার পদোন্নতি পেয়েও পদায়ন পাচ্ছেন নাদক্ষ ও নিরপেক্ষ কর্মকর্তারা। যা সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও বিশৃঙ্খলার প্রমাণ। দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের এক বছর পরও বিশৃঙ্খল প্রশাসনের শৃঙ্খলা ফেরানো যায়নি। বরং অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, দায়িত্ব পালনে গাফিলতি আরো তীব্র হয়েছে। বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরের সচিব নিয়োগে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত কর্মকর্তাদের মধ্যে চলছেএক ধরনের স্নায়ুযুদ্ধ। জনপ্রশাসন সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে গত বছর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কিছু আমলাপ্রশাসনে চরদখলের মতো চেয়ার দখলের প্রতিযোগিতায় নামে। বিপুলসংখ্যক জেলা প্রশাসককে বিগত সরকারের সহযোগী ট্যাগ দিয়ে প্রত্যাহার করে নতুন ডিসি নিয়োগ দিতে গিয়ে লঙ্কাকাণ্ড ঘটায়। তা নিয়ে প্রশাসন ক্যাডারের একাধিক কর্মকর্তা জড়িয়ে পড়েনহাতাহাতি ও ধস্তাধস্তিতে। জনপ্রশাসনের এক কর্মকর্তাকে ওয়াশরুমে আটকে রাখা হয়। তবেরাজনৈতিক প্রভাবের বিষয়টি সর্বশেষ শিক্ষা সচিব ও জনপ্রশাসন সচিব নিয়োগে প্রকাশ্যে আসে। প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ রাখতে একটি দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। তাছাড়া ডিসি নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ ওঠেছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় ওই বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হয়নি।
সূত্র জানায়,চলতি বছরের ৩ আগস্টপরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে সংযুক্ত এক অতিরিক্ত সচিবকে পদোন্নতি দিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়। কিন্তু বিসিএস ১৫তম ব্যাচের ওই কর্মকর্তা ই-মেইলে যোগদানপত্র দিলেও উপদেষ্টার আপত্তির কারণে এখনো বসতে পারেননিসশরীরে সচিবের চেয়ারে। তারপর আড়াই মাস পার হলেও ওই কর্মকর্তার কপালে সচিবের চেয়ার জোটেনি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে সচিবের তালিকায় ওই কর্মকর্তার নাম না থাকলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তালিকায় রয়েছে। তবে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে তাঁর সাবেক কর্মস্থল পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে সংযুক্তি দেখানো হয়েছে। তাছাড়া সাড়ে ৬ মাস আগে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব বদলি হয়ে গত ২৭ মার্চ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। তারপর থেকে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগে সচিব নেই। যদিও মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন। আর গত ২৭ আগস্ট চাকরি শেষে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব অবসরে যান। কিন্তু দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে ওই গুরুত্বপূর্ণ বিভাগেও সচিব নেই। আর দীর্ঘ তিন সপ্তাহ পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সচিব পদায়ন করা হলেও এই মুহূর্তে পাঁচটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগসচিব শূন্য রয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, সরকারি চাকরির বয়স শেষ হওয়ায় গত ১৬ অক্টোবর স্বাভাবিকভাবে বস্ত্র ও পাট সচিবকে অবসরোত্তর  ছুটিতে (পিআরএল) পাঠানো হলেও নতুন কোনো সচিব পদায়ন করা হয়নি। ফলে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, পরিকল্পনা বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে বর্তমানে কোনো সচিব নেই। ওসব গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবের রুটিন দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তারাপালন করছেন। কিন্তু নিয়মিত সচিব না থাকায় ওসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দাপ্তরিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। পরিকল্পনা বিভাগের সচিব গত ২৫ সেপ্টেম্বর পিআরএলে গেলে সচিবের রুটির দায়িত্ব পান অতিরিক্ত সচিব। সমপ্রতি  আর সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিবকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একই পদে বদলি করা হলে ওই বিভাগের সচিবের পদটি শুন্য হয়ে পড়ে। এখনো ওই পদে কাউকে পদায়ন করা হয়নি। তার আগে দুই বছরের জন্য চুক্তিতে থাকা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে গত ২১ সেপ্টেম্বর বদলি করে পরিকল্পনা কমিশনেপাঠানো হয়। তিন সপ্তাহ পর চূক্তিতে থাকা সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ওই পদে বদলি করা হয়। অথচ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত দুই দশকে এক দিনের জন্যও সচিব ছাড়া থাকার নজির নেই। তার আগে প্রায় এক মাস খালি থাকার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব নিয়োগ দেয়া হয়। তাছাড়া সমপ্রতি দুজন কর্মকর্তা পদোন্নতি পেয়ে সচিব হলেও নানা বাধায় সময়মতো চেয়ারে বসতে পারেননি।
এদিকে প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রশাসনের বিদ্যমান অবস্থা শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের অদক্ষতা ও দলবাজির ফসল। তাঁদের রাজনীতি ও ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের কারণেমন্ত্রণালয় চলছে মাসের পর মাস সচিব ছাড়া। আবার পদোন্নতি পেয়েও দক্ষ ও নিরপেক্ষ কর্মকর্তারা পদায়ন পাচ্ছেন না। যা সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও বিশৃঙ্খলার প্রমাণ। বর্তমান সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা ও উদাসীনতার কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সচিব না থাকলে ওই মন্ত্রণালয় ও এর অধীন সংস্থার প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স